বুধবার, ৫ আগস্ট, ২০২০

সতীত্ব

সতীত্ব

নীলাশা শীল 



                                                                  (সব চরিত্র কাল্পনিক) 

বাকি সব মেয়েদের মতো লীলাও বাবা মা এর কথা মতো বিয়ে করলো যদিও তার বিয়ে হয়েছে বিশাল রাজপরিবারে সকল বাবা মায়ের মতোই  লীলার বাবা মাও চেয়েছিলো তাকে সুপুত্রের হাতে দিতে 
বেশ ধুমধাম করেই বিয়ে তো হলো বিয়ের দিন আশেপাশের সব গ্রামের লোকজনের সমাগম হলো বাবার একমাত্র মেয়ে বলে কথা গ্রামের সব লোক নতুন জামাই দেখে খুব খুশি হলো রাজপরিবারের ছেলে বলে কথা 
                                                                               
আজকে বৌভাত অনেক আশা নিয়ে লীলা অপেক্ষা করছে মনটা যেন কেমন করছে আজকে এতো নতুন লোকজন এতো এলাহী ব্যাপার এতো লোকজন তাও নিজেকে যেন কেমন এক এক মনে হচ্ছে 
বিয়ের আগে বান্ধবীরা কত কি বলেছিলো,সেসব আজকে মনে পড়ছে খুব রাতে বৌভাতে গ্রামের সব লোক এসে নতুন বৌকে আশীর্বাদ  করে গেলো 
লীলার বৌদিরা ফুলসজ্জা নিয়ে অনেক কিছু বলে গেছে,মা বুঝিয়ে গেছে কিভাবে সংসার করতে হবে 
তাও  লীলার অস্বস্তিটা কাটলো না

নতুন জীবনের নতুন সংসারের কথা ভাবতে ভাবতেই  তার স্বামী এসে হাজির
এই খোলো তাড়াতাড়ি 
একটু অবাক হলো লীলা এবার কেমন কথা নিজেকে কানকেই বিশ্বাস করতে পারছিলোনা 
কথা কি কানে  যায় না নাকি? খোল তাড়াতাড়ি, আগে খুলিসনি নাকি কোনোদিন ?
আস্তে আস্তে লীলা তার গহনাগুলো খুলতে খুলতেই তার স্বামী ঘরের আলোটা বন্ধ করে দিলো এবার খুব ঘাবড়ে গেলো লীলা ,তার স্বামী তাকে টেনে ধরে  তার উপর উঠে যায় লীলা বাধা দিয়েও দিতে পারেনা। তার শরীরের সব শক্তি দিয়ে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু তার স্বামীর শক্তির সামনে সে পেরে ওঠে না ।অমানুষ এর মতো সারারাত ধরে  ছেলে খেলা করলো  তার শরীরের  সাথে।
তুই সতী নাকি ? অপেক্ষা কর এখনই সব বের হবে ।
স্বামীর কথা শুনে  লীলা মুখ ফুটে কিছুই  বললো না শুধু  চোখ এর কোনে  জল ভরে  গেলো।
মানুষ নাকি অমানুষ? হ্যাঁ আমি সতী ,সতীত্বের প্রমাণ হচ্ছে আজ আমার মনে মনে  বলতে লাগলো লীলা।
সারা রাত ওর সরিয়ে উপর খেলা চললো। 
খেলা শেষে ওর রক্তাত্ত দেহটা পরে রইলো বিছানাতে ।

সকাল এ  আস্তে ধীরে উঠে কলঘরে  চলে গেলো লীলা  এসে ঘরে যে দেখতে পেলো স্বামীকে
চা দেব?
দে,রাতে বেশ মজা পেয়েছি ভালোই মজা দিয়েছিস তুই আমাকে।
লীলা অবাক হয়ে চেয়ে রইলো।
ওই শোন্ তুই আমাদের মালি এর মেয়ে নেহাত তুই জাতিতে ব্রাম্মন তাই তোকে বিয়ে করে,এই বাড়িতে তুই খাবার পাবি ঘুমের জায়গা পাবি আর কিছু আশা করিস না কিন্তু আর রোজ রাতে তোর শরীর আমার।

       2
এভাবে দিন এর পর দিন লীলার শরীরের ওপর নির্যাতন হয়।হ্যাঁ যদিও ২ দিন খুব কষ্ট সহ্য করলেও এখন অভ্যস্ত কিন্তু তার শরীরের খেলাতে যে কোনো ভালোবাসা  নেই।
পর দিন সকাল এর  লীলা তার স্বামী কে বলল আমি বাবার বাড়ি যাবো রাতের  আগেই চলে আসবো কথা দিচ্ছি।
 আচ্ছা!যা কিন্তু .. তোর আমার সম্পর্ক এর কথা কেউ যেন..
নানা কেউ জানবে না।
জানিস তো জানলে তোর বাপের কাজটা যাবে আর তুই খাবারও পাবিনা।

                                                                          
পর দিন বাপের বাড়ি গেলো লীলা
মা - মা! তুই ভালোতো?
লীলা - হ্যাঁ মা আমি খুব ভালো আছি ।
বাবা - কি মা ভালো আছিস তো?
লীলা- হ্যাঁ বাবা আমার হাসি খুশিতে তো বাতাসও হাসে।
মা - কেনো যেনো তোর চোখ এক কথা বলছে তুই এক কথা বলছিস। 
লীলা - না মা আমি আমি সত্যি বলছি মা।মা আমি একটু ঘুরে আসবো?
মা - কোথায়? অমল এর কাছে?
লীলা- হয় মা আমি তোমাকে মিথ্যে বলবোনা।ওকে বলে আসি আমি কত সুখী। 
মা - আচ্ছা যা কিন্তু সাবধান।

 
লীলা অমলের বাড়ির দিকে রওনা দিলো।
অমলের বাড়িতে কেউ থাকে না মা কাজ করে লোকের বাড়িতে বাবা অনেক ছোটোতেই  মারা গেছে
ভালো আছো অমল এই বলে তাকে  ডেকে উঠলো।
 কে?
আমি,কিগো এত তাড়াতাড়ি ভুলে গেলে?
ভালো আছো? স্বামী বুঝি অনেক ভালোবাসে!আদর থেকে সময় পেয়েছো তাহলে ?
এই বলতে বলতে লীলা  কেঁদে ফেললো।
কি হলো স্বামী কে বুঝি  খুব  মনে পড়ছে?
না না মনে পড়ছে তোমার আমার ভালোবাসার দিন।
আচ্ছা আচ্ছা এবার চুপ করো তুমি এখন অন্যের ঘরের বৌ।
ঠিক করেছিল তুমি সেদিন। একটা আবদার নিয়ে এসেছি  সিথিতে সিদুর ভরিয়ে দাও আমার।
আচ্ছা ! 
খুব কি  বড় কিছু চেয়েছিলাম অমল?
 দেখো তুমি ব্রাম্মন বংশের মেয়ে আমি তো ছোট  আমার কাছে অর্থের বরো অভাব  এই বাড়িটাই আছে বাবাও নেই মা কাজ করে।কোনো কোনোদিন ভাত খাই আর  কোনো কোনোদিন  তো জোটে না পর্যন্ত .. ভালোবাসার মানুষের  কষ্ট কি দেখা যায়.,তুমি  এখন রাজবাড়ির বৌ বেশ ব্যঙ্গ স্বরেই বললো অমল।  
অমল একটা কথা বলবে আমাকে ফিরিয়ে নেবে ? আমার সাথে সংসার করবে ?
রোজ রাতে স্বামীর সাথে রাত কাটিয়ে আজ আমাকে বলছো !তুমি না সত্যি !
লীলার বিন্দু মাত্র কিছু না বলে চলে এলো সেখান থেকে চলে গেলো।  
মা বাবাকে বিদায় জানিয়ে স্বামী ঘরে ফিরলো লীলা।
কিরে এত তাড়াতাড়ি  চলে এলি? যাইহোক এখন বিশ্রাম করে নে রাতে আসবো আমি।

পরদিন সকালে 

আজ্ঞে তোমাকে একটা  কথা বলবো! বেশ ভয়ে ভয়ে বললো লীলা ।
হ্যাঁ বল কি চাই তোর ।তুই যা চাইবি তাই দেব।তোর শরীরের অনেক স্বাদ তুই আমাকে আনন্দ দিস ।   
 কিছুক্ষণ চুপ থেকে লীলা বললো , আমি অন্তঃসত্ত্বা,আপনার সন্তান আসতে চলেছে।
কি? আমার সন্তান! না না আমি এতো তাড়াতাড়ি  সেসব ভাবিনি তু্ই নষ্ট করে একে আমি চাইনা একে 
লীলা তখন কিছুই না বলে চলে এলো ঘরে।কান্না পেলেও সে যেন  কাদঁতে পারলো না  সে,সত্যি তার প্রতি মুহূর্ত হলো সতীত্বের পরীক্ষা  এই বলে নিজের মন কে  মানিয়ে নিলো।
পর দিন বাড়িতে কেউ নেই  স্বামী শুধু রাতে  আসে তার কাছে  তার শরীরের  লোভে। লীলা কি করবে না সেসব  ভেবে  একটা  সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো।

           

অমল তার প্রথম উপার্জনে  একটা  শাড়ী দিয়েছিলো লীলা সেটিকে হাতে নিয়ে  রান্নাঘর মুখী হলো। লীলা তার  সন্তান কে বললো আমি জানিনা আমি ঠিক করেছি কি ভুল জানিনা,আমাকে ক্ষমা করিস তোর পিতা তোকে চায় না , আমি আমার শরীরকে চাইনা আমার শরীরকে  ঘেন্না করছে ,রূপকে ঘেন্না করছে ক্ষমা করিস এই বলতে বলতে লীলা  ঝুলে পড়লো ।
এভাবেই শেষ হলো লীলার গল্প।
মর্যাদা পাক সকল ভালোবাসা, সমাজের সকল মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ উঠে জন্ম নিক ভালোবাসার, প্রতিটি ভালোবাসা যেন মর্যাদা পায়ে ।


১০টি মন্তব্য:

INDRANIL বলেছেন...

বাস্তব জীবনের সাথে মিল পেলাম। খুব সুন্দর লেখা।

Unknown বলেছেন...

খুব মর্মস্পর্শী লেখা ।কলম চলুক ।

Pooja Sarkar বলেছেন...

Khub valo laglo mon chuye gelo❣️

নামহীন বলেছেন...

অনেক মেয়ের গল্প, অনেক জীবনের গল্প...!!!

Pritam বলেছেন...

Khub valo hoyeche...hope to see more writings from you so that I can read

Pritam বলেছেন...

Khub valo hoyeche..hope to see more writings from you so that I can read

Unknown বলেছেন...

এই সমাজে এখনো অনেক লীলা তাদের সতীত্বের প্রমাণ দিয়েই চলেছে।।খুব ভালো লিখেছো রাই।।লিখে যাও আরো।।অনেক শুভকামনা রইলো।। আশা করছি তোমার কলম থেকে আরো এরকম সুন্দর লেখা পাব।।

RAHUL বলেছেন...

এই সমাজে এখনো অনেক লীলা তাদের সতীত্বের প্রমাণ দিয়েই চলেছে।।খুব ভালো লিখেছো রাই।।লিখে যাও আরো।।অনেক শুভকামনা রইলো।। আশা করছি তোমার কলম থেকে আরো এরকম সুন্দর লেখা পাব।।

Dipten Seal বলেছেন...

Khub sundor hoye6e nilasha. Aro valo valo lekha chai.

Subhajit Sanyal Photography বলেছেন...

কিছু জায়গাই একটু বিস্তারিত হলে ভালো লাগতো,otherwise all over ভালোই লেগেছে আমার। বাস্তব জীবনের কাহিনী। রোজের জীবনী।। লিখতে থাকো।। লেখার হাত আরো ভালো হবে। Best wishes 😊

Featured Post

সতীত্ব

সতীত্ব নীলাশা শীল                                                                    (সব চরিত্র কাল্পনিক)  বাকি সব মেয়েদের মতো লীলাও বাবা মা...